শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
নড়াইলে খুলনার রেঞ্জ ডিআইজিকে ফুলেল শুভেচ্ছা রাণীশংকৈলে ৭৫ জন গ্রাম পুলিশ পেলেন বাই-সাইকেল ও পোশাক আজকের গাছ- আগামীর নিঃশ্বাস- বৃক্ষরোপনে ইউএনও রুবেল রানা ইছামতী নদীতে থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার কিশোরগঞ্জকে গ্রীন ও ক্লিন কিশোরগঞ্জ গড়তে চাই- নবাগত ইউএনও নীলফামারীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইমারত নির্মাণ তারাগঞ্জে একই ব্যক্তির ৬ গরু চুরি নড়াইলে এক গৃহবধূর তিন সন্তান জন্ম ধুনটে বসতভিটা অবৈধ দখল চেষ্টায় থানায় অভিযোগ আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানী করবেন না- এটিএম আজহার ফুলবাড়ীর দৌলতপুরে জমি জমার বিরোধে মারপিট ১৭ বছর পর রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা জুলাই বিপ্লবী শহীদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও আলচনা ত্রিশালে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ মিলল পুকুরে জলঢাকায় এক শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দিলেন ইউএনও কর্মীবান্ধব সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন জাহিদ হোসেন তারাগঞ্জে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে টিন ও চেক বিতরণ কুমিল্লায় র‌্যাবের হাতে মাদক সহ গ্রেপ্তার ২ ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গাসহ গ্রেপ্তার ১

গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে মাদককারবারীর ঘরবাড়ি ভাঙ্গচুর

আব্দুর রহমান ঈশান- নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বিরামপুর গ্রামের ভেতর পুকুর পাড়ে ছোট ঘর বানিয়ে সেখানে মাদক ও দেহ কারবার শুরু করেন সোহেল মিয়া। এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে গ্রামবাসী বেশ কয়েকবার সালিশ-বৈঠক করে তাকে এসব বন্ধ করতে বললেও সোহেল কারোর কথায় পাত্তা দেননি। শেষে তাকে গ্রাম ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়ে বসবাস করতে সময়সীমা বেঁধে দেন লোকজন। তাতেও কাজ না হওয়ায় সোহেলের মাদক ও দেহ কারবারের আস্তানা হিসেবে পরিচিত ঘরটি ভেঙে দেয় গ্রামবাসী।

গত বুধবার ৭ই জুন দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। তবে অভিযুক্ত সোহেল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কয়েকজন বখাটে আমার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিল। এর প্রতিবাদ করায় তারা ষড়যন্ত্র করে আমার ঘর ভেঙেছে। তারা ঘরের মালামাল লুটপাট করেছে। আমি এ ঘটনায় আদালতে মামলা করব।

পুলিশের খাতায় সোহলে একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার নামে থানায় অন্তত ১৫টির বেশি মাদকের মামলা রয়েছে। এসব মামালায় অসংখ্যবার গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। সোহেলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারও তার সঙ্গে মাদক কারবারে যুক্ত। নাসরিনের নামেও একাধিক মামলা রয়েছে।

শনিবার ১০ই জুন দুপুরে বিরামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়- গ্রামের ভেতর পুকুর পাড়ে থাকা সোহেলের টিনের ঘরটি বেড়াবিহীন দাঁড়িয়ে রয়েছে। বেড়া ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে চাউনির টিন ও পিলার অক্ষত রয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানান- বুধবার দুপুরে গ্রামবাসী মিলে সোহেলের ঘরটি ভেঙে ফেলেছে। সোহেল এক যুগের বেশি সময় ধরে গ্রামে মাদকের কারবার করে। গ্রেফতার হয়েছে অসংখ্যবার। এখন বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে টিনের ঘর বেঁধে এটাকে মাদক ও দেহ কারবারের আস্তানা বানিয়েছে। তার স্ত্রী-কন্যাকেও এ কাজে জড়িত করেছে। দিন-রাত বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিচিত লোকজন আসে। গ্রামের সামাজিক পরিবেশ তার কারণে নষ্ট। এ নিয়ে দুই-তিন গ্রামের মানুষ তার প্রতি ক্ষিপ্ত। কয়েক দফা এ নিয়ে সালিশ করে তাকে এসব বন্ধ করতে বলেছে। বারবার বললেও কারো কথা শুনেনি সোহেল। তাই গ্রামবাসী মিলে তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের আস্তানা ভেঙে ফেলেছে।

সোহেলের বড় ভাই নুর জামাল বলেন- সোহেল এ ঘরটিকে মাদক ও দেহ কারবারের আস্তানা বানিয়ে ফেলেছে। তার এসব অনৈতিক কর্মের কারণে বাইরে কোথাও আমরা মুখ দেখাতে পারি না। আত্মীয়স্বজনরা তার জন্য লজ্জায় পড়তে হয়। সোহেলকে প্রথমে এসব বন্ধ করার জন্য সময়-সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শোনেনি। আমিসহ আমাদের আত্মীয়স্বজন ও গ্রামের লোকজন নিয়ে তার ঘর অপকর্মের ঘরটি ভাঙা হয়েছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ চৌধুরী বলেন- মাদক-দেহ কারবার শুরু করে গ্রামের মান-সম্মান শেষ করে দিয়েছে সোহেল। গ্রামে চুরি ও মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। সম্মান নিয়ে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। তাই গ্রামের মানুষ মিলেই তার আস্তানা ভেঙেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলি নুর মিয়া বলেন- সোহেলের কর্মকাণ্ডে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ। গ্রামের বাড়িতে মাদক ও দেহ কারবারের মতো কাজ চিন্তাও করা যায় না। আর এসব নিজের ঘরে শুরু করেছে সোহেল। গ্রামের মানুষ তাদের মান-সম্মান নিয়ে বসবাস দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। কোনোভাবেই তাকে থামানো যাচ্ছিল না। পরে গ্রামবাসী তার আস্তানা ভেঙেছে।

উপজেলার বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোতাহার চৌধুরী বলেন- কিছুদিন আগেও ৩ গ্রামের হাজারও মানুষ সোহেলের এসব অপকর্মের বিষয়ে সালিশ করেছে। অনৈতিক কাজ বন্ধ না করলে তাকে গ্রাম থেকে চলে যেতে বলেছেন সবাই। কিন্তু সে কোনো কথা শোনায় সোহেলে দুই ভাই ও আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামের লোকজন মিলে তার অনৈতিক কাজের আস্তানাটা ভেঙেছে। সোহেলের কারণে গ্রামে মাদকসেবী ও চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছিল। সোহেলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর সাজার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

অভিযুক্ত মোঃ সোহেল মিয়া জানান- মাদক-দেহ কারবারের অভিযোগ মিথ্যা। গ্রামের কয়েকজন বখাটে আমার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিল। এর প্রতিবাদ করায় তারা ষড়যন্ত্র করে আমার ঘর ভেঙেছে। আমি অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী আমার বিচার হবে। ঘর ভাঙবে এটা তো হতে পারে না। তারা ঘরের মালামাল লুটপাট করেছে। আমি এ ঘটনায় আদালতে মামলা করবো। এক সময় আমি মাদক সেবন করতাম, এখন আর করি না।

সোহেলের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন- আমার স্বামী গাঁজা খায়। দেহ কারবারের অভিযোগ সঠিক না। আমাদেরকে সময় দিলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতাম। আমার ঘর ভেঙে স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুটপাট করেছে। এলাকার কয়েকজন বখাটে আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঘর ভেঙে নাটক করছে। গ্রামবাসী মিলে নয়, ওই বখাটেরা যারা কু-প্রস্তাব দিয়েছিল তারাই ঘর ভেঙেছে। গ্রামবাসীকে আমি কোনো দোষ দেই না।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন- ঘর ভাঙার খবর পেয়ে একজন অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি আরোও বলেন- সোহেল চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে মাদকের অসংখ্য মামলা রয়েছে। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও মনে হয় মামলা আছে। কিছুদিন আগেও তাকে মাদকসহ গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com